চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে যেতে হয়েছে এমন ৮০ শতাংশ রোগীর শরীরে আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পেয়েছেন গবেষকরা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া ২৪ রোগীর নমুনা থেকে প্রাথমিকভাবে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষণার সম্পূর্ণ ফল পেতে আরও ৫ থেকে ৭ দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের সদস্য ডা. আবদুর রব।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের পাঁচজন গবেষক এটি করেছেন। গবেষণায় সহযোগিতা করেছে ঢাকার চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন।
পাঁচ গবেষক হলেন চবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের চিকিৎসক এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আবদুর রব, ডা. মিনহাজুল হক ও ডা. রাজদীপ বিশ্বাস।
প্রাথমিকভাবে পাওয়া গবেষণার এই ফল জার্মানি থেকে প্রকাশিত ভাইরাসের আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার ‘গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেট’ (GISAID) তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন ডা. আব্দুর রব।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ২৪ জন করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাটি পরিচালনা করি। তাদের সবাই গত এপ্রিল ও মের মাঝামাঝি সময় হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এই ২৪ জনের মধ্যে ১০ জনকে আইসিইউতে যেতে হয়েছিল। যাদের সবার হাই ফ্লো অক্সিজেন প্রয়োজন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইসিইউতে যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৮০ শতাংশের নমুনায় আফ্রিকান ধরন বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর রোগীদের নমুনায়ও ৭৫ শতাংশ বেটা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। বেটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের ৯০ শতাংশের জ্বর, কফ ও সর্দির উপসর্গ ছিল। বাকি রোগীদের নমুনায় আলফা ভ্যারিয়েন্ট বা যুক্তরাজ্যের ধরন পাওয়া গেছে। তাদের অর্ধেকের উপসর্গ ছিল স্বল্পমাত্রার।’
ডা. আব্দুর রব জানান, তাদের গবেষণাটি চলমান। তারা প্রাথমিকভাবে জিনোম সিকোয়েন্সের ফল ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য পেয়েছেন। তারা এখন ভ্যারিয়েন্টের সিকোয়েন্সে কোনো ধরনের পরিবর্তন আছে কি না সেটা দেখবেন। সিকোয়েন্সের তথ্যগুলো আরও সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করবেন।
গবেষণার সম্পূর্ণ ফল পেতে আরও ৫ থেকে ৭ দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া প্রাথমিকভাবে ওই ২৪ জনের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়নি।